রোজা ফরজ
এ মহৎ ফযীলতের কারণেই আল্লাহ্ পাক রোজার বিধান সর্বযুগেই রেখেছিলেন। হযরত বাবা আদম আলাইহিস্ সালাম থেকে শুরু করে আখেরী নবী হযরত সায়িদুল মুরসালিন মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত সকল নবী রাসুলগণের যুগেই বোজার বিধান ছিল। এই দিকে ইঙ্গিত করেই আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন-
অর্থাৎ- হে মুমিনগণ ! তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমটি ছিল তোমাদের পূর্ববতীদের জন্য; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। (সূরা বাকারা: ১৮৩)
এ আয়াত প্রসঙ্গে তাফসীর গ্রন্থ ‘রুহুল মা‘আনী’তে এছেসে (—) শব্দ দ্বারা হয়রত আদম আলইহিস্ সালাম- এর যুগ পর্যন্ত সকল যুগের মানুষকেই বুঝানো হয়েছে।
আদম আলাইহিস্ সালাম থেকে শুরু করে হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম-এর যুগপর্যন্ত সকল যুগের মানুষকেই বুঝানো হয়েছে ।
তবে পূর্বৰতী সকলের উপর ফরয হলেও ধরণ ছিল বিভিন্ন রকম। হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম থেকে হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম-এর সময়কাল পর্যন্ত রোযার ধরণ ছিল এক রকম । হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম থেকে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখার বিধান ছিল মর্মে ইবনু কাছীরের বর্ননায় পাওয়া যায়, হযরত মুয়ায, ইবনু মাসউদ, ইবনু আব্বাস, আতা, কাতাদা এবং দ্বাহহাক রাদিয়াল্লাহু আনহুম হতে ।
হযরত দাউদ আলাইহিস্ সালাম-এর রোজা পালনের ব্যাপারে বুখারী শরীফে এসেছে যে, তিনি একদিন রোজা রাখতেন এবং একদিন ছেড়ে দিতেন। এভাবে সারা বছরই রোজা রাখতেন।
বুখরী শরীফের অপর বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখতে পেলেন যে, ইয়াহুদীরা আশুরার দিন সাওম পালন করছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন- কী ব্যাপার? তারা বলল- এ অতি উত্তম দিন। এ দিনে আল্লাহ্ পাক বনী ইসরাইলকে তাদের শত্রুর কবল থেকে মুক্তি দান করেন, ফলে এ দিনে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম সাওম পালন করেন । রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদকরলেন- আমি তোমাদের থেকে হযরত মুসার অধিক হকদার । এরপর তিনি এ দিন সাওম পালনের নির্দেশ দেন। তবে তিনি এর আগে বা পরে মিলিয়ে রোযা রাখতেন যেন তাদের সাথে সাদৃশ্য না হয়ে যায়।
আর উম্মতে মুহাম্মদী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র জন্য প্রতি রমাদ্ধানের এক মাস রোজা ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন-
অর্থাৎ- রমজান মাস যাতে মানুষের হিদায়াত ও সৎপথের স্পষ্ঠ নিদর্শন এবং সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী আল-কুরআন অবতীর্ন হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে রোজা পালন করে । (সুরা বাকারা: ১৮৫)
মাসআলা: যে রমাদ্বান মাসের রোযা ফরয হওয়াকে অস্বীকার বা ঠাট্টা অবহেলা করবে, সে ‘কাফির’ ৷ আর ইচ্ছাকৃত আদায় না করলে “কবীরা গুনাহগার” ও ‘ফাসিক’হবে । (শামী ও আলমগীরী)